বোয়ালমারীতে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৩, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উদযাপনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার ওয়াপদার মোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওয়াপদা মোড়ের পাশে হারুন শপিং কমপ্লেক্সে ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে। ভাঙচুর করা হয় আশেপাশের দোকানে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি কৃষকদলের সহসভাপতি খন্দকার না...
ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উদযাপনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার ওয়াপদার মোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় ওয়াপদা মোড়ের পাশে হারুন শপিং কমপ্লেক্সে ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে। ভাঙচুর করা হয় আশেপাশের দোকানে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি কৃষকদলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শামসুদ্দীন মিয়া ওরফে ঝুনুর অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ নয়।
এই দুই নেতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে বিএনপি এ আসনে দলীয় মনোনয়ন স্থগিত রেখেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল ৩টার দিকে শামসুদ্দীন মিয়ার সমর্থকরা ওয়াপদা মোড় এলাকায় এবং নাসিরুলের সমর্থকরা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ মোড়ে সমবেত হতে শুরু করেন। তাদের হাতে বাঁশের লাঠির মাথায় ধানের শীষ বাঁধা ছিল।
বিকেল ৪টার দিকে নাসিরুলের পক্ষের লোকজন মিছিল নিয়ে ওয়াপদা মোড় এলাকার দিকে এগোতে থাকে। সেসময় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা মহিলা কলেজের দিকে এগোতে থাকে। বোয়ালমারী পৌরসভার সামনে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে একে অপরের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, নাসিরুলের সমর্থকরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা পিছু হটে ওয়াপদা মোড়ে হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেয়।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. শিব্বির আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন।
কিন্তু নাসিরুলের সমর্থকদের হামলায় এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এরপর নাসিরুলের সমর্থকরা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইলে আগুন দেয়। তারা ভবনের নিচতলায় শামসুদ্দিন মিয়ার কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর-লুটপাট করে এবং আশেপাশে বিভিন্ন দোকানে হামলা চালায়।
সেসময় পুলিশ সদস্যদের এক কোনে অবস্থান নিয়ে আত্মরক্ষা করতে দেখা যায়। দমকল বাহিনীর একটি গাড়ি আগুন নেভাতে এসে হামলার শিকার হয়।
জানতে চাইলে শামসুদ্দীন মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রশাসনকে জানিয়ে আমরা ওয়াপদার মোড়ে অনুষ্ঠান করছিলাম। এসময় নাসিরুলের লোকজন আওয়ামী লীগের লোকদের সঙ্গে নিয়ে অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা চালায়।'
এ ঘটনায় তার ১৫ সমর্থক আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে নাসিরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শামসুদ্দীনের লোকজন আমাদের লোকের ওপর হামলা করেছে। একজনকে কুপিয়ে জখম করেছে। আমি এলাকায় ছিলাম না। তাদের হামলায় আমার ৪-৫ জন লোক আহত হয়েছে।'
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে অবস্থান নেয়। পর দমকল বাহিনী পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, 'বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর-অগ্নিংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।'
বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।